পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর লেনদেনের ওপর বিদ্যমান উৎসে করহার কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পাশাপাশি এ কর সমন্বয়ের সুযোগ দেয়ারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানিয়েছেন ডিবিএ নেতারা। ডিবিএর পক্ষ থেকে এ দাবি তুলে ধরেন সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা উৎসে করকে আরো সহজীকরণের জন্য পরিবর্তন চাচ্ছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের করহার উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। বর্তমানে বাজারে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ও কমেছে। আয় না হলেও আয়কর দিতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা এ করহার কমানোর সুপারিশ করছি।’
ডিবিএ জানায়, ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃক প্রদত্ত সিকিউরিটিজ লেনদেনের মূল্য পরিশোধের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মোট লেনদেনের ওপর থেকে দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর সংগ্রহ করে, যা মোট আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে ভারতে এ করের পরিমাণ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, পাকিস্তানে দশমিক শূন্য শূন্য শূন্য ৬৫, সিঙ্গাপুরে দশমিক শূন্য শূন্য ৭৫ ও হংকংয়ে দশমিক শূন্য শূন্য ৫৬৫ শতাংশ।
এ হিসাবে ১ লাখ টাকার লেনদেন হলে বাংলাদেশে ৫০ টাকা উৎসে কর দিতে হয়। ভারতে একই পরিমাণ লেনদেনের ক্ষেত্রে দিতে হয় ১০ রুপি, পাকিস্তানে মাত্র ৬৫ পয়সা। সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে এ করের পরিমাণ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। অন্যদিকে মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত ও তুরস্কে লেনদেনের ওপর কোনো উৎসে করই দিতে হয় না।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, ‘সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর কমিশন ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান আয়ের উৎস। অত্যধিক হারে কর আরোপ করার ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজেই ব্রোকারেজ হাউজের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং পুঁজিবাজারকে সক্রিয় করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর বিদ্যমান করহার যৌক্তিক কারণে কমানো একান্ত প্রয়োজন। লোকসানে থাকা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ধরে রাখতে এবং বাজারের স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান আয়কর আইন ২০২৩-এর নবম অধ্যায়, ধারা ৭০-এর (৩)-এর সঙ্গে বর্ধিত বিধান সংযোজনের সুপারিশ করছি।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অর্থনীতির নানা খাতে গতি সঞ্চারে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত এখনো পুঁজিবাজারে এর কোনো ছোঁয়া লাগেনি। অভ্যুত্থানের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জরিমানা ছাড়া আর কোনো উন্নতি নেই। ক্যাপিটাল মার্কেটে দৈন্যদশা চলছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী থেকে ১২ লাখে নেমেছে। সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট পাঁচ লাখও নেই। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে।
বিটি/ আরকে