বাংলাদেশ ব্যাংক পাচার হওয়া অর্থের মাধ্যমে অর্জিত কিছু বিদেশি সম্পদ আগামী ছয় মাসের মধ্যে ফ্রিজ (স্থিতাবস্থা) করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
গভর্নর বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ধারণাটি আমাদের জন্য নতুন। যেসব দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, সেসব দেশের সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আইন সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা পরামর্শ করছি ও শিখছি। সম্পদ শনাক্তে আমরা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথেও কাজ করছি। চূড়ান্ত প্রমাণ সংগ্রহের পর আমরা সেসব সম্পদ ফ্রিজ করার পদক্ষেপ নেব।’
তিনি আরও বলেন, ফ্রিজ করা অর্থ ফেরত আনার এ আইনি লড়াই হবে জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি। ‘এটা সহজ কাজ নয়, তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি,’ বলেন তিনি।
‘আমরা বিকল্প পথও খুঁজছি। দীর্ঘমেয়াদি আইনি প্রক্রিয়া এড়াতে আমরা কাউন্সেলিং এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করছি,’ বলেন গভর্নর।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের বিষয়েও কথা বলেন।
‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। এটি একটি বড় অর্জন। আগামী বছরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি,’ বলেন তিনি।
বহিরাগত চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান গভর্নর। তার মতে, গত সাত মাসে রেমিট্যান্সে ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ এবং রপ্তানিতে ১১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
‘বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি সত্ত্বেও আমরা সময়মতো এলএনজি আমদানি করে গ্যাস সরবরাহ সচল রেখেছি। আমদানি বাড়িয়ে সার সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট হ্রাসের মাধ্যমে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি,’ বলেন তিনি।
ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি নিয়ে গভর্নর বলেন, অতীতে অর্থপাচারের সমস্যা থাকলেও এখন দৃঢ় নীতিমালা ও পর্যবেক্ষণের ফলে খাতটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।