রাশিয়ার গমের প্রধান ক্রেতা দেশগুলো সম্প্রতি আমদানি বাড়িয়েছে। চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকায় রাশিয়া গমের রফতানি মূল্য টনপ্রতি ২৫৫ ডলার করেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান আইকেএআরের প্রধাস দিমিত্রি রাইলকো জানান, এপ্রিলের দ্বিতীয়ার্ধে সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে রাশিয়ায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিনযুক্ত গমের ফ্রি-অন-বোর্ড (এফওবি) মূল্য বেড়েছে ৬ ডলার। এ সময় খাদ্যশস্যটির রফতানি মূল্য স্থির হয়েছে টনপ্রতি ২৫৫ ডলারে।
সভেকন কনসালট্যান্সি জানায়, গত সপ্তাহে একই মানের রুশ গম টনপ্রতি ২৫২-২৫৬ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ২৪৭-২৫০ ডলারের তুলনায় বেশি।
প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষকরা জানান, সপ্তাহের শুরুতে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে শক্তিশালী মূল্য ও আমদানিকারকদের মধ্যে চাহিদার ঊর্ধ্বমুখিতা গমের মূল্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
রাশিয়া থেকে প্রধান গম আমদানিকারক দেশ ইরান। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, দেশটি আবারো রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্যটির আমদানি বাড়িয়েছে। ইরানের সরকারি সংস্থা জিটিসি (গভর্নমেন্ট ট্রেডিং করপোরেশন) প্রায় পাঁচ লাখ টন গম কিনেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা প্রধানত রাশিয়া থেকে সরবরাহ করা হবে।
বিশ্বব্যাপী গম বাণিজ্যে তুরস্কের হিস্যা উল্লেখযোগ্য। গত সপ্তাহে দেশটি ‘ফ্লাওয়ার এক্সপোর্ট স্কিমের’ অধীনে শুল্কমুক্ত গম আমদানির অনুমতি দিয়েছে, যা চাহিদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। উল্লেখ্য, এটি তুরস্কের একটি বিশেষ নীতিমালা, যার অধীনে দেশটি আমদানি করা গম থেকে ময়দা প্রক্রিয়াজাত করে। পরবর্তী সময়ে তা বিশ্ববাজারে রফতানি করা হয়।
সভেকনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত সপ্তাহে রাশিয়া থেকে মোট ৩ লাখ ২০ হাজার টন গম রফতানি হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ৩ লাখ ৪০ হাজার টনের তুলনায় কম। তবে সংস্থাটি মার্চে গম রফতানি পূর্বাভাস এক লাখ টন বাড়িয়ে ১৬ লাখ টনে উন্নীত করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৪৮ লাখ টনের তুলনায় অনেক কম।
আইকেএআরও তাদের মার্চে রফতানি পূর্বাভাস এক লাখ টন বাড়িয়ে ১৪-১৫ লাখ টনে উন্নীত করে। এছাড়া সোমবার সংস্থাটি ২০২৫ সালের গম উৎপাদন পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে। এ সময় মোট উৎপাদন ৮ কোটি ২৫ লাখ টন হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে দেয়া পূর্বাভাসে এ পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ টন।
এদিকে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি) ২০২৫-২৬ শস্যবছরের (জুলাই-জুন) জন্য প্রথমবারের মতো পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে। এ সময় গম উৎপাদন ১ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৮০ কোটি ৭০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।