যদি কোনো কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গ্রহণের ফলে সৃষ্ট প্রাথমিক উত্থান-পতন সামলে নিতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এআই সেই কোম্পানিকে সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করবে। ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)-এর এক সম্মেলনে উপস্থাপিত একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণাটির লেখকরা ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর ডেটা এবং বিভিন্ন সমীক্ষার তথ্য ব্যবহার করেছেন। তারা দেখেছেন, উৎপাদন খাতে যারা প্রথমদিকে এআই গ্রহণ করেছে, তারা রোবট দিয়ে কর্মীদের প্রতিস্থাপন করার সময় উৎপাদনশীলতায় ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে।
তাদের এই পর্যবেক্ষণ প্রচলিত ধারণার বিপরীত। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এআই কাজকে আরও উৎপাদনশীল করে তোলে এবং অনেক ক্ষেত্রে চাকরি কেড়ে নেওয়ার পরিবর্তে কাজের মানোন্নয়নে সহায়তা করে।
গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক ক্রিস্টিনা ম্যাকএলহেরান সম্মেলনে বলেন, “স্বল্পমেয়াদে, আমরা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে দেখেছি।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, উৎপাদনকারীদের প্রচলিত কিছু পদ্ধতি, যেমন কম ইনভেন্টরি বা মজুদ রাখা, এআই ব্যবহারের কারণে ব্যাহত হওয়ায় উৎপাদনশীলতায় এই ঘাটতি দেখা দেয়।
তবে সময়ের সাথে সাথে, এই সংস্থাগুলো যদি প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে, তাহলে তারা বিক্রি বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা এবং কর্মসংস্থান—সব ক্ষেত্রেই অন্যদের ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে।
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ম্যাকএলহেরান বলেন, “এই প্রাথমিক ধাক্কাটা কাটিয়ে ওঠাই যেন সমস্যার অংশ।”
তিনি আরও বলেন, পুরোনো কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত এই ঘুরে দাঁড়ানোটা দেখা যায় না, কারণ সেগুলো আকারে বড় হয় এবং এই পরিবর্তন সম্পন্ন করতে হিমশিম খায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাকএলহেরান এবং তার সহকর্মীরা ৩০,০০০ সংস্থার নমুনার উপর কাজ করেছেন, যেখানে গবেষণার সময়কালে এআই গ্রহণ ৭.৫% থেকে বেড়ে ৯.১% হয়েছে।
এর আগে সম্মেলনের শুরুতে, ইসিবি প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দ বলেছিলেন যে ইউরোপের ২৩% থেকে ২৯% কর্মী এআই-এর উচ্চ ঝুঁকির মুখে রয়েছেন, তবে এর মানে এই নয় যে চাকরির বাজারে বিপর্যয় নেমে আসবে, কারণ পুরোনো পদ বিলুপ্ত হওয়ার সাথে সাথে নতুন ভূমিকা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটি/ আরকে